কত রকমের লবণ সম্পর্কে জানেন?

খাবারের সময় আমাদের অনেকেরই আলাদা লবন নেওয়ার অব্যাস আছে। অন্ততেএক চিমটি হলেও লবণ যেন আমাদের লাগবেই। তবে অতিরিক্ত লবণ আবার ক্ষতিকরও হতে পারে। একদিনে ৩ গ্রাম বা এক চা চামচের চেয়ে একটু কম পরিমাণ লবণের চেয়ে বেশি খাওয়া ঠিক নয়।

কিন্তু একেবারে লবণ ছাড়া আবার চলবেও না। প্রতিদিনই আমাদের সামান্য পরিমাণ লবণ দরকার। আমাদের দেহের তরলের ভারসাম্য রক্ষার জন্য লবণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মাংসপেশির সংকোচন এবং শিথিলকরণে সহায়তার জন্য স্নায়বিক স্পন্দন প্রেরণ করে।

Salt

বাড়িতে খাবার তৈরির ক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছামতো কম বা বেশি লবণ ব্যবহার করা যায়। কিন্তু সমস্যা হয় বাইরের খাবারের ক্ষেত্রে। কেননা বাইরের খাবারে লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটি ব্যক্তির ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। 

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন প্রকার লবণ পাওয়া যায়। প্রকার বেদে এক এক ধরণের লবনে রয়েছে এক এক রকম গুণাবলি। আসুন যেনে নেই বিভিন্ন প্রকার লবণ ব্যাপারেঃ

০১ - সামুদ্রিক লবণ বা কেল্টিক সামুদ্রিক লবণঃ এটি একটি অপরিশুদ্ধ, অপ্রক্রিয়াজাতকৃত লবণ। এর গন্ধও অনন্য। সামুদ্রিক লবণ সমুদ্রের পানিকে বাষ্পীভূত করে উৎপাদন করা হয়।

সি সল্টের নানা গুণের উপকারিতাঃ
  1. রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখে সামুদ্রিক লবণ। ফলে ডায়াবেটিস কমাতে ডায়েটে রাখতেই পারেন এই সি সল্ট।
  2. সি সল্ট রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে রক্তচাপ কমে এবং ভাল থাকে হার্ট।    এতে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে।
০২ - সাধারণ লবণঃ সাধারণ লবণদেখতে ধবধবে সাদা। এটি আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকে। এই লবণ সমুদ্র থেকে সংগৃহীত হয়। তবে প্যাকেটবন্দি করার আগে নানা পরিশোধনের মধ্যে দিয়ে আসে। 

এর ফলে তা জরুরি ও উপকারী খনিজ হারায়। আবার লবণ মিহি রাখা ও জমাট না বাঁধার জন্য মেশানো হয় নানা রাসায়নিক। এতে লবণ দেখতে আরো সুন্দর দেখায়। ক্রেতা আকৃষ্ট করতে যার ভূমিকা অপরিসীম। 

কিন্তু এর  ফলে যাদের হাইপোথাইরয়েডের মতো সমস্যা আছে, তারা সমস্যায় পড়েন। হাই ব্লাড প্রেশার বা কিডনির সমস্যা থাকলেও লবণ খাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

লবণ গ্রহণের পরিমাণ অতিরিক্ত হলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া যাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ আছে তাদের খাবারে লবণের পরিমাণ সঠিক না থাকলে অবস্থার অবনতি হতে পারে।

  1. স্বাস্থ্য গবেষকদের মতে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে কাঁচা লবণ।
  2. অতিরিক্ত লবণ খাওয়া হলে রক্তচাপ বৃদ্ধি, পেটে ক্যান্সার, স্থূলতা, এমনকি হাঁপানির সমস্যা  দেখা দেয়।
  3. খাবারে বাড়তি লবণ খাওয়া হলে হৃদপিণ্ড ও কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  4. অতিরিক্ত লবণ খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে এবং মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
  5. লবণ মানেই সোডিয়াম। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে মস্তিষ্কে রক্তের প্রবাহ কমতে শুরু করে।
  6. লবণ বেশি খেলে ব্লাড প্রেসার বাড়ে। যার কারণে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের আশঙ্কা দেখা দেয়।
  7. নানাবিধ হার্টের রোগ ও ব্রেইন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।
  8. শরীরে লবণের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমতে শুরু করে। ফলে হাড়ের ক্ষমতা কমতে থাকে, দেখা দিতে পারে অস্টিওপোরোসিস।

সৈন্ধব লবণ উপকারিতা

০৩ - সৈন্ধব লবণঃ সমুদ্রের পানি বাষ্পীভূত করে তৈরি করা হয় এই লবণ। দানাদার এই লবণের তেজ সাধারণ লবণের চেয়ে বেশি হয়। রান্নায়, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বা ব্যথা কমানোর জন্য গরম সেঁক দেয়ার সময় ব্যবহার হয়।

  1. পুষ্টি সরবরাহ করে অন্যান্য নুনের মত এটি পিত্ত দশাকে বাড়িয়ে তোলে না। 
  2. পেশীর ব্যথায় সাহায্য করে এক চুটকি সৈন্ধব লবণ তিলের তেলে মিশিয়ে সেটিকে পেশী কিংবা গাঁটে মালিশ করুন, ব্যথা অনেক কমবে।
  3. বুকে কষ্ট দুর হয়।
  4. পেশীতে আড়ষ্ঠ ভাব এবং টান লাগা।
  5. গলা ব্যথা কমায়।
  6. ওজন কমাতে সহায়ক।

০৪ - বিট লবণঃ বিট লবণ মূলত হিমালয় থেকে সংগৃহীত। তবে কয়লা, কিছু জড়ি-বুটি, বিশেষ বিশেষ গাছের বাকল ইত্যাদিসহ ফারনেসের মধ্যে রাখা হয় ২৪ ঘণ্টার জন্য। তার ফলে তীব্র সালফারাস গন্ধ তৈরি হয়। খাবার বা শরবতের স্বাদ বাড়িয়ে তুলতে এই লবণ ব্যবহার করা হয়। এটি হজমের জন্যও সহায়ক।

বিট লবণের উপকারিতা

  1. বিট লবণ সাধারণত ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, পেট খারাপ ইত্যাদি সহ পেটের নানান সমস্যা দূর করে। প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে বিট লবণ মিশিয়ে খেলে শরীর থাকবে সুস্থ।
  2. বিট লবণের উপকারিতা বিট লবণে থাকা খনিজগুলো অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে আমাদের শরীরে। 
  3. যাদের সুগারের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত খেতে পারেন বিট লবণ।

০৫ - কোশের সল্টঃ কোশের সল্ট বিদেশি বিভিন্ন রান্নায় এই লবণ ব্যবহার করা হয়। দানাদার এই লবণ মাছ-মাংস বা ভাজাভুজির উপর ছড়িয়ে দিলে খাবারের স্বাদ বেড়ে যায় বহুগুণ। কিন্তু কোশের সল্টে বাড়তি আয়োডিন নেই। এটি বেশিদিন ফেলে রেখে ব্যবহার করলে জমাট বাঁধারও আশঙ্কা আছে। কোশের সল্ট কেনার সময় ভালো ব্র্যান্ড দেখে মান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে কেনা উচিত।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা থেকে শুরু করে হৃদযন্ত্র ভাল রাখা , হার্টের সমস্যা রোধ করতে খুব ভাল এই কোশার লবণ।

০৬ - পিঙ্ক সল্টঃ এই লবণের উৎস সমুদ্র নয়, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের আগ্নেয়গিরি। দানাদার, তীব্র স্বাদ ও গন্ধের হাওয়াইয়ান সল্ট দু’ ধরনের হয়- কালো ও গোলাপি। সব ধরনের লবণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে হিমালয়ের গোলাপি লবণ। ‘কালা নামাক’ নামে অপরিশোধিত লবণ পানির এই কাঁচামাল পাওয়া যায় হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে। এই লবণ ব্যবহারে যা কিছুই প্রস্তুত করা হোক না কেন তাতে এক ভিন্ন ধরনের সুগন্ধ যুক্ত হয়। পাকিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের কোথাও কোথাও এই লবণ হাতে তৈরি করা হয়। মিনারেলের কারণেই লবণের গায়ে চমৎকার রং ধরে। রান্নায় এবং রান্নার শেষে ফিনিশিং সল্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এই বিশেষ লবণ। এই প্রাকৃতিক লবণের স্বাদ অন্য লবণের চেয়ে বেশি তীব্র।

পিঙ্ক সল্ট এর উপকারিতাঃ

  1. শরীরে বিভিন্ন জয়েন্ট বা গাঁট-কে সুস্থ রাখে।
  2. হাঁড় ভালো রাখে।
  3. ঘুম ভালো হয়।
  4. হজমশক্তি বাড়ে।
  5. যৌন ক্ষমতা বাড়ায়।
  6. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
  7. বলিরেখা কমায়।
  8. শরীর থেকে টক্সিন বার করে।

০৭ - গ্রে সল্টঃ গ্রে সল্ট পাওয়া যায় ফ্রান্সে। জোয়ারের সময় সমুদ্রের পানি যেসব অগভীর জলাশয়ে ঢুকে পড়ে, তারই একেবারে নিচের স্তরে জমা হতে থাকে এই লবণ। লবণ জমতে জমতে পুরু স্তর তৈরি হয় এবং পানি সরে গেলে আবার সেই স্তর থেকেই লবণ তোলা হয়। এই লবণের রং কালচে, খুব মিহি বা ফুরফুরেও হয় না এটি।

গ্রে সল্ট এর উপকারিতাঃ

  1. অসুখ বিসুখে লবণ পানির জুড়ি নেই। দাঁত ব্যথা হোক বা ঠান্ডা-সর্দি অল্প লবণ পানিতে গার্গল করলে আরাম হয়।
  2. সেবাম নিয়ন্ত্রণ তৈলাক্ত ত্বকে ধুলাবালি, মৃত কোষ বেশি জমে।
  3. জেল্লা বাড়ায় ত্বকে মৃত কোষের স্তর সরে গেলেই আসল জেল্লা বেরিয়ে আসে।
  4. ব্রণ নিয়ন্ত্রণে মুখের অতিরিক্ত তেল ব্রণের সমস্যার মুল কারণ।

০৮ - রসুন বা সেলারি লবণঃ এই সুগন্ধি লবণ তৈরি হয় টেবিল, পাথুরে বা সামুদ্রিক লবণের সঙ্গে শুকনো রসুন বা সেলারি নামের বিশেষ সুগন্ধিযুক্ত গাছের পাতার মিশ্রণে। তরকারিতে বিশেষ স্বাদ যুক্ত করতে এর জুড়ি মেলা ভার।


০৯ -বাঁশের লবণঃ বাঁশের লবণ কোরিয়ান রন্ধনসম্পর্কীয় সংস্কৃতি এবং তাদের স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বাঁশের লবণ পার্পল সল্ট নামে পরিচিত, এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি লবণ। 

মাত্র ২৫০ গ্রাম লবণ প্রায় ১০০ মার্কিন ডলার (৭৫০০ টাকা) কিনতে প্রস্তুত? এই লবণ কোরিয়ানদের নিজস্ব বাঁশের লবণ।

বাঁশের লবণ বহু শতাব্দী ধরে কোরিয়ান ঐতিহ্যবাহী ওষুধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যদিও বাঁশের লবণ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল, পরে তা বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

বাঁশের লবণ তৈরি প্রক্রিয়া সমূহঃ

  • বাঁশের লবণ একটি বিশেষ চুলায় প্রস্তুত করা হয়। স্প্রাউটগুলি সাধারণ লবণে ভরা হয় এবং ৮০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায ৯ বার  উত্তপ্ত হয়। এই প্রক্রিয়াটি ৪০ থেকে ৪৫ দিন সময় নেয়।
  • এইভাবে লবণ স্প্রাউটের খনিজগুলির উপকারিতা দেয়। এই প্রক্রিয়া লবণের আকৃতি এবং রঙ পরিবর্তন করে । এরপর তা গুঁড়ো করে প্যাকেটে বিক্রি করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণরূপে হাতে করা হয়। 
  • প্রক্রিয়া শেষে, বাঁশকে ১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উত্তপ্ত করা হয়। বাঁশ পোড়ানোর সাথে সাথে লবণের বড় অংশ সংগ্রহ করা হয়।

এই লবণের স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ

  1. গবেষণায় দেখা গেছে যে তারা আমাদের শরীরে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের বৃদ্ধি বন্ধ করে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। সাধারণ লবণের তুলনায় এতে আয়রন, পটাসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম বেশি থাকে।  
  2. বাঁশের লবণ দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ, আলসার, মাড়ির রোগ এবং গলা ব্যথার চিকিৎসায় খুবই কার্যকর।

বাঁশ লবণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ

অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এই লবণ শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক । এতে পলিক্লোরিনেটেড ডিবেনজো-প্যারা-ডাইঅক্সিন এবং পলিক্লোরিনযুক্ত ডিবেনজোফুরান নামে রাসায়নিক যৌগ রয়েছে। তাই, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী মহিলা এবং ছোট বাচ্চাদের এটি না খাওয়ার পরামর্শ দেন। গবেষণায় আরও দেখা যায় যে বাঁশের লবণে আর্সেনিক থাকে। আপনি যদি অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করেন তবে বাঁশের লবণ এড়ানো ভাল। যদি কোনও গুরুতর অসুস্থতার জন্য চিকিত্সা চলছে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বাঁশের লবণ খান।

১০ - পিংক সল্ট বা হিমালয়ের লবণঃ পৃথিবীর সবচেয়ে শুদ্ধ লবণ। হিমালয় লবণ পাকিস্তান অংশের পাঞ্জাব থেকে উত্তোলন করা শিলা লবণ। প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর আগে হিমালয়ের স্ফটিক লবণের সমুদ্রতল লাভায় নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর তা সহস্রাব্দ ধরে চাপা পড়ে ছিল বরফের নিচে, যা এটিকে ক্রমাগত বাড়তে থাকা দূষণ থেকে রক্ষা করেছিল। এখন এটি একমাত্র অপরিশোধিত, প্রক্রিয়াবিহীন ও প্রাকৃতিকভাবে হাতে উত্তোলন করা হয় লবণ। আর এভাবেই এটি পরিণত হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বিশুদ্ধ লবণে।

সমুদ্রতলের বিশুদ্ধ অবস্থা হিমালয়ের লবণকে প্রক্রিয়াজাত টেবিল লবণের চেয়ে বেশি খনিজ সমৃদ্ধ করে তুলেছে। ফসফরাস, ব্রোমিন, বোরন ও জিঙ্কসহ এতে প্রায় ৮০ খনিজ উপাদান রয়েছে। এর স্ফটিক পাথরের হওয়ায় সূক্ষ্ম টেবিল লবণের চেয়েও বড় ও স্বল্প পরিমাণে সোডিয়াম সমৃদ্ধ।

স্থানীয়দের মতে, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সেনাবাহিনী সর্বপ্রথম হিমালয় লবণের মজুত আবিষ্কার করে। ১২০০ দশকে পাঞ্জাব গোত্রের জানজুয়ার লোকেরা সর্বপ্রথম খনি থেকে লবণ উত্তোলন করে।

আপনারা কি জানেন, সামুদ্রিক লবণের চেয়ে হিমালয়ের লবণের পার্থক্যগুলো কী কী? আপনাদের সুবিধার জন্য খাস ফুডের পক্ষ থেকে এই দুই ধরণের লবণের পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হল।


পিংক সল্টিএর উপকারিতাঃ

  1. সাধারণ লবণ হল সমুদ্রপৃষ্ঠের বাষ্পীভবন দ্বারা প্রাপ্ত লবণ, তবে হিমালয়ের লবণ হচ্ছে পাকিস্তানের হিমালয়ের কাছাকাছি গুহা থেকে প্রাপ্ত লবণ।
  2. সমুদ্রের লবণ সাদা হলেও কিছু ট্রেস মিনারেলের উপস্থিতির কারণে হিমালয়ের লবণ খানিকটা গোলাপি আভা যুক্ত।
  3. সমুদ্রের লবণের অভাব রয়েছে বিধায় আলাদা করে আয়োডিন যুক্ত করা হয়, তবে হিমালয়ের লবণে শুধু আয়োডিন নয় বরং আরও অন্যান্য খনিজ উপাদানের উপস্থিতি রয়েছে।

হিমালয়ের লবনের উপকারিতাঃ

  1. এতে সালফেট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, কপার, জিংক, সেলেনিয়াম, আয়োডিন এবং ফ্লোরাইডসহ প্রায় ৮০টির মত খনিজ উপাদান বিদ্যমান।
  2. এতে বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদান দেহের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখে।
  3. শরীরকে বিষমুক্ত বা ডিটক্স করতে বেশ ভালো কাজ করে। গোসলের পানিতে এই লবন ব্যবহার করলে শরীরের কোষগুলো পুনরুজ্জীবিত হয় এবং বিষমুক্ত হয়।
  4. প্রাকৃতিকভাবে পরিপাক নালীর টক্সিক পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।
  5. হিমালয়ান সল্ট শরীরের ক্ষারীয় অবস্থা বজায় থাকতে সাহায্য করে। এটি দেহের তরলের হাইড্রোজেন আয়নের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  6. সীসা, মার্কারি ও আর্সেনিকের মত ভারী ধাতু শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।
  7. সাইনুসাইটিস, অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস বা অ্যালার্জি নিরাময়ে সাহায্য করে।
  8. এই লবণের অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান অতিরিক্ত মিউকাসকে নরম ও আলগা হতে সাহায্য করে এবং মিউকোসিলিয়ারি পরিবহণের গতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  9. এই লবণের উপাদানগুলো ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যুকে নিরাময়ে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে গরম পানিতে লবন মিশিয়ে ভাপ নিতে হবে।
  10. দাঁত ভালো রাখতে এটি বেশ ভালো কাজ করে।


বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে পিংক সল্ট-এর ১০০ গ্রামের দামই ৫ থেকে ৮ ডলারে বিক্রি হয় যা সাধারণ খাবার লবণের চেয়ে বিশ গুণ বেশি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে হিমালয় লবণের মূল্য পড়ছে প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ৬৫ রুপি। স্বনামধন্য ই-কমার্স সাইট অ্যামাজন-এ হিমালয় লবণের মূল্য প্রতি ৪০০ গ্রামের জন্য পড়ছে ১৫০ রুপি।



SHARE THIS

Author:

Latest
Next Post