Facebook-এ অনাকাঙ্ক্ষিত বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে Likes লুকিয়ে রাখুন।

কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালো আছেন। আজ আপনাদের সাথে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেয়ার করবো।
ফেসবুক তো সবাই ব্যবহার করেন। যদিও প্রশ্নটা নিতান্তই অযৌক্তিক। কারণ, এমনো পাবলিক আছেন যারা Activity’র Tag লাগিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করেন যে দৈনিক এতো ঘন্টা Active. এ্যারিস্টটল বেঁচে থাকলে হয়তো মতবাদ টা এভাবে দিতেন, ‘‘যে ফেসবুক ব্যবহার করেনা, সে হয় পশু, না হয় দেবতা।’’ :P
যাইহোক ফেসবুক ব্যবহারের পাশাপাশি এর কিছু বিষয় সম্পর্কে সতর্ক থাকাটাও জরুরী।
আপনারা জানেন যে ফেসবুকে Likes নামক একটা অপশন আছে যেখানে আপনার পছন্দের কিছু পেজ অন্তর্ভুক্ত থাকে। একবার লাইক দিয়ে সেই পেজটি সম্পর্কে আর জ্ঞান রাখিনা। কিন্তু আমাদের অন্তরালে সেই পেজগুলো রীতিমত তাদের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। বুঝিয়ে বলছি।
বছরখানেক আগে এক প্রিয় বন্ধুর এক পেজে লাইক দেখেছিলাম। পেজটির নামে 18+ শব্দটা থাকলেও দেখেছিলাম যে পেজটা খুব সুন্দর সুন্দর বিনোদনমূলক পোস্ট উপহার দিচ্ছে। গতকাল আবার সেই বন্ধুটির Likes-এ গেলাম। গিয়ে দেখি সেই পেজটা এখনো আছে। সেইসাথে দেখলাম আমার ৪ টা পুরাতন বন্ধুরও লাইক আছে। কিন্তু পোস্টগুলো দেখে আমি রীতিমতো অবাক! শুধু Adult আর Sexual Content. সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিষয়টা জানালাম।


অনেকে হয়তো বলবেন যে লাইক নিজের ব্যাপার। আমি যা ইচ্ছা লাইক দেবো। যেরকম ইচ্ছা পেজ খুলবো। তাতে আপনার কী? যার ইচ্ছা নেই সে কখনো ঐসব পেজে যাবে না। আর যার ইচ্ছা আছে লাইক না দিয়েও যাবে।
কথা সত্য। কিন্তু ভাই, যখন দেখি আমার ফ্রেন্ডলিস্টের একজন স্ট্যাটাস দিচ্ছে,
“আজ আমার PSC পরীক্ষা। ইংরেজি’র কিছুই পড়ি নাই। ফ্রেন্ডস, দোয়া কোরো সবাই।’’
“আজ আমার JSC পরীক্ষা। বাংলা’র কিছুই পড়ি নাই। ফ্রেন্ডস, দোয়া কোরো সবাই।’’
(বিঃদ্রঃ স্ট্যাটাস দেয়া মাত্র শত শত লাইক)
তখন আপনি কী বলবেন? এদের বয়স কতো? একজনের ১১ আরেকজনের ১৪। আমরা না হয় বুঝলাম কিন্তু আপনি কি তাদের বোঝাতে পারবেন? আর ঐ বয়সেই একটা বাচ্চা যেকোন বিষয়ে বেশি কৌতূহলী হয়। তাই, আপনার ছোট ভাই-বোনদের কথা ভেবে হলেও আপনাদের কাছে অনুরোধ এধরনের পেজে কেউ লাইক দেবেন না।
সত্যিই খুবই মর্মাহত হই যখন দেখি একজন মুসলিম ভাইয়ের About-এ, ‘‘আল্লাহ দিয়েছেন জান, নবী (সাঃ) আমার প্রাণ’’ অথচ তাদের লাইক দেখে হই অপমান।
কয়েকজনকে বলেওছিলাম যে ভাই আপনার Likes-এ কিছু অশ্লীল পেজ আছে। সেগুলো Unlike করে দিলে আপনার প্রফাইলটা আরো সুন্দর লাগতো।
উত্তরে বলে যে ভাই আমি ফেসবুকের তেমন কিছু বুঝিনা। তখন আর কিছুই বলার থাকে না। নিজ দায়িত্বে আনফ্রেন্ড বা ব্লক করে দিই।
২০০ এর কম লাইক বিশিষ্ট পেজের নাম পরিবর্তন করা যায়। (এর বেশিও যায়) আর একটা ১৯৯ লাইকবিশিষ্ট পেজ তৈরি করতে আমার দুইদিনের বেশি লাগবে না। কারণ, যারা ফেসবুক সম্পর্কে ভালো জানেন তারা জানেন যে,
যেকোন সংখ্যার ফ্রেন্ড থাকলেই সেটাকে যদি পেজে মাইগ্রেট করা যায়, তাহলে ঐ ফ্রেন্ডগুলো পেজের লাইকারে অটোমেটিক্যালি পরিণত হয়। তবে এক্ষেত্রে আইডির যাবতীয় ডাটা হারাতে হয়। তাছাড়াও দুটি পেজ একসাথে জোড়া লাগানো এভাবে আরো লাইক বাড়ানো যায়। (তারপরও পোলাপাইন কেনো যে দুই সংখ্যার লাইকবিশিষ্ট পেজে ইনভাইট করে বুঝিনা!)
তাই আপনি বুঝতেই পারবেন না যে আপনার বন্ধু কখন একটা তার আইডিটাকে একটা পেজে পরিণত করছে। সেটা হতেও পারে অশ্লীল পেজ। কিন্তু তা কিন্তু আপনি জানছেন না।
তাই, আপনার উচিত এখনি একবার আপনার Likes গুলোকে যাচাই করা যে আপনার লাইক করা পেজগুলোর কোনোটার ক্যাটেগরি পরিবর্তন করে অশ্লীল কিছু করা হয়েছে কিনা।
আর আপনারা বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য নিজেদের Likes গুলো লুকিয়ে রাখতে পারেন। কিভাবে রাখবেন সেটাও শিখিয়ে দিচ্ছি।
পিসিতে যেভাবে করবেন:
প্রথম পদ্ধতি:
১। আপনার প্রফাইলের More থেকে Likes-এ যান।
২। এবার Add Likes এর ডান পাশে ক্লিক করে Edit Privacy তে যান।
৩। এবার বিভিন্ন ক্যাটেগরির যেগুলো আপনি লুকিয়ে রাখতে চান তা Public বা  গ্লোব চিহ্নিত স্থানের ড্রপডাউনে ক্লিক করে Only Me বা  তালা চিহ্নবিশিষ্ট করে দিন।
দ্বিতীয় পদ্ধতি:
১। আপনার প্রফাইলের More থেকে Manage Sections-এ যান।
২। এবার Likes ব্যতীত অন্য যা যা চান সেগুলোতে টিক দিন। এরপর Save করুন।
মোবাইলে যেভাবে করবেন:
১। আপনার প্রফাইলে গিয়ে Likes এ যান।
২। এবার চিত্রের মতো জায়গাগুলোতে গ্লোব অর্থাৎ Public অপশন দেখতে পাবেন।
৩। সেগুলোতে ক্লিক করে Privacy'র অপশন থেকে Only Me তে ক্লিক করুন। হয়ে যাবে।
আর কোনো বন্ধুর Likes-এ অশ্লীল কিছু দেখলেই তাকে এ বিষয়ে অবহিত করুন। আর ফেসবুকের সৌন্দর্য বজায় রাখুন।
ধন্যবাদ সবাইকে।


SHARE THIS

Author:

Previous Post
Next Post